• আজ [bangla_time], [bangla_day], [english_date], [bangla_date], [hijri_date]
  • magickhobor@gmail.com
  • ঢাকা, বাংলাদেশ
ব্রেকিং নিউজ

৫ লাশ নিয়ে ধোঁয়াশা কমছেই না, মুখের ছবি পাঠানো হচ্ছে স্টেশনে স্টেশনে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ম্যাজিক খবর ডটকম
প্রকাশের তারিখ: Wednesday, July 10th, 2024 11:01 am পরিবর্তনের তারিখ: Wednesday, July 10, 2024 11:02 AM

৫ লাশ নিয়ে ধোঁয়াশা কমছেই না, মুখের ছবি পাঠানো হচ্ছে স্টেশনে স্টেশনে
 
8 / 100

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রেললাইন থেকে ছিন্নভিন্ন যে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তারা সেখানে কীভাবে গেলেন, কী তাদের পরিচয়; সেটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেসবের কোনো উত্তরই মিলছে না। লাশগুলো উদ্ধারের পর একদিন পেরিয়ে গেলেও তাদের পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি; লাশের দাবি নিয়েও আসেননি কেউ। এমনকি আঙুলের ছাপ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের ব্যবস্থাও কাজে আসেনি। পুলিশের ধারণা, নিহতদের পরিচয়পত্র নেই।

ঘটনাস্থল থেকে কোনো মোবাইল ফোন, ব্যাগ কিছুই পাওয়া যায়নি যা দিয়ে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়।

পুলিশের মরিয়া চেষ্টার অংশ হিসেবে নিহতদেরকে ‘ভবঘুরে’ হিসেবে ধরে নিয়ে তাদের মুখচ্ছবি তুলে পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন স্টেশনে, যাতে অন্য ভবঘুরেদের দেখিয়ে পরিচয় উদ্ধার করা যায়।

এ দিকে পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করেছে রেলওয়ে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। এ ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে জনমনে রহস্য দানা বাঁধছে। আলোচনা চলছে গোটা জেলা ছাড়িয়ে দেশ জুড়ে। নিহতরা ট্রেনে থেকে পড়ে গিয়ে কাটা পড়েছেন, নাকি রেললাইনে বসা অবস্থায় কাটা পড়েছেন তাও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

সোমবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কমলপুর রেললাইনে পাশে পাঁচ জনের ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। নিহত পাঁচ জনের সবাই পুরুষ। তাদের মধ্যে দুই জন ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সি কিশোর, এক জনের বয়স আনুমানিক ২০ বছর এবং অপর দুজন ৩০ ও ৪৫ বছর বয়সী। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ, পিবিআই, রায়পুরা থানা ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেন।

নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. শহীদুল্লাহ জানান, পিবিআই হাতের ছাপ সংগ্রহ করলেও তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে তাদের কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। আমরা মরদেহগুলোর ডিএনএ ও ভিসেরা সংগ্রহ করেছি। এগুলো ঢাকার মালিবাগের সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হবে। ডিএনএ পরিচয় শনাক্তে ও ভিসেরার মাধ্যমে তারা কোনো নেশা করেছে কি-না শনাক্ত করা যাবে। আর মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে রেলওয়ে কবরস্থানে সিরিয়ালভাবে দাফন করা হয়েছে। আর এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা—ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই বলা যাবে।

কেউ কেউ ধারণা করছেন, নিহত তরুণদের বেশভূষা ও পোশাক দেখে টোকাই শ্রেণির মনে হয়েছে। ট্রেনের ছাদে বা ইঞ্জিনে বসে তারা হয়তো যাচ্ছিলেন। দুই বগির মাঝখানে বা ইঞ্জিন থেকে পড়ে গিয়ে কাটা পড়ে মারা গেছেন। তবে এভাবে পাঁচ জনের মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। আবার কেউ বলছেন, হত্যার পর তাদের লাশ এখানে ফেলে গেছে কেউ। পুলিশের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা দরকার।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রেলওয়ের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন। ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তিদের লাশের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টায় আঙুলের ছাপ নিয়েছে পিবিআই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এরা ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের ধারণা, ছাদ থেকে পড়ে মরদেহ এভাবে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয় না। আমরা সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করছি। ঘটনার সময় চলাচলকারী ট্রেন, টিটি ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। আশা করছি, দ্রুতই রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।

স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ
রায়পুরা মেথিকান্দা স্টেশন থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে ঘটনাস্থল কমলপুর। এর ঢাকামুখী রেললাইনের একপাশে জলাশয়ের সঙ্গে খাকচর দক্ষিণ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অপরপাশে নরসিংদী-রায়পুরা আঞ্চলিক সড়ক। এই সড়কে সিএনজিচালিত যানবাহন চলাচল করলেও স্থানীয় লোকজনের তেমন চলাচল নেই। ঘটনাস্থলের পাশে ঝোপঝাড়। দুই পাশে প্রায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বাড়িঘর বা দোকানপাটও নেই। ঘটনাস্থলে কোনো সংযোগ সড়ক নেই। এখানে রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় কেউ কাটা পড়ার কথা নয়। সেজন্য এটি ট্রেনে কাটা পড়ার ঘটনা, নাকি হত্যাকাণ্ড তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।